প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশবাসী তাদের পক্ষে রয়েছে। কাজেই তাঁর সরকারের পতন ঘটানো এবং দেশকে আবার অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, তারা (বিএনপি–জামায়াত) আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার স্বপ্ন দেখছে। তারা কীভাবে ভুলে যায় যে, আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের পাশে থাকে। যার জন্য জনগণ তাদের বারবার ভোট দেয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে গতকাল সোমবার তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় কথা বলছিলেন শেখ হাসিনা। রোজার মাসে ইফতার পার্টিতে গিয়ে সরকারবিরোধীরা আল্লাহ রাসুলের নাম না নিয়ে কেবল ক্ষমতাসীন দলের গিবত করে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা প্রতিনিয়ত আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটাবে, উৎখাত করবে, নির্বাচন হতে দেবে না, মানুষ খুন করে, অগ্নিসন্ত্রাস করে, এখন তারা কিন্তু কোনো মানুষকে ইফতার দেয় না, নিজেরা ইফতার পার্টি খায়। ইফতার পার্টিতে গিয়েও আল্লাহ রাসুলের নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়। নিজেরা ইফতার খায়, আওয়ামী লীগের গিবত গায়। খবর বাসস ও বিডিনিউজের। আওয়ামী লীগ ইফতার পার্টি করবে না জানিয়ে তিনি বলেন, এই খাবার সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সারা বাংলাদেশে একমাত্র আওয়ামী লীগ এবং আমাদের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও আমাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সাধারণ মানুষের মাঝে ইফতার বিলি করছেন।
সরকারবিরোধীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা খেয়েদেয়ে মাইক একটা লাগিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করবেন। আওয়ামী লীগের অপরাধটা কী? এদেশ স্বাধীন করেছে, সেটা অপরাধ? আওয়ামী লীগের অপরাধটা কী? গরিব মানুষের পাশে দাঁড়ায়, দেশটা আজ উন্নত করেছে সেটাই কি অপরাধ? তারা যে গণতন্ত্রের কথা বলে, আমরা কিন্তু গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি।
সরকারপ্রধান মনে করেন, দেশের সরকারবিরোধীরা গণতন্ত্রের ভাষা বোঝে না। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের অর্থ বোঝে? গণতন্ত্র বানান করতে পারে? সেটাই আমার প্রশ্ন। তারা তোতা পাখির মতো বলে যাচ্ছে যে, গণতন্ত্রের জন্য নাকি লড়াই করবে। এদেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আজকে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আছে বলেই কথা বলতে পারে। আওয়ামী লীগ সরকার দেশে বেসরকারি টেলিভিশনের লাইসেন্স দেওয়া শুরু করায় প্রায় অর্ধশত টেলিভিশন, রেডিও আমাদের হয়ে গেছে। যার যার ইচ্ছা মতো টকশো করছে, কথা বলে যাচ্ছে। জনগণ স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক অধিকারের সঙ্গে একটি বদলে যাওয়া বাংলাদেশ পেয়েছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিএনপি যেখানে ডাল–ভাতের ওয়াদা করে ব্যর্থ হয়েছিল, এরপর একজন এসে আলু খেতে বলল, ভাতের পরিবর্তে আলু, কিন্তু আলু উৎপাদনে সেভাবে করতে পারেনি। সেখানে আওয়ামী লীগের আমলে অন্তত ভাতের কষ্ট নাই। এটা আমরা বলতে পারি।
মানুষের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন আওয়ামী লীগের হাত ধরে এসেছে বলে দাবি করে দলের সভাপতি বলেন, এখন জিনিসের দাম নিয়ে মানুষ বলছে, মুরগির দাম বাড়ল কেন, পেঁয়াজের দাম বাড়ল কেন, চিনির দাম বাড়ল কেন, তেলের দাম বাড়ল কেন? একসময় দেশের মানুষ নুন–ভাতের কথা চিন্তা করত। সেটুকু জোগাড় করতে পারত না। এখন সেই অবস্থা থেকে আওয়ামী লীগ পরিবর্তন করতে পেরেছে।
সরকারের অবদান তুলে ধরে তিনি বলেন, আজকে খাদ্যশস্য, দানাদার শস্য আমরা চার গুণ উৎপাদন বৃদ্ধি করেছি। আজকে আমরা ইলিশ মাছের উৎপাদন আড়াই গুণ বৃদ্ধি করেছি, আমাদের গবাদি পশু সেটাও দুই গুণ বৃদ্ধি হয়েছে। মুরগি, পোল্ট্রি চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সাত গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে দুধের উৎপাদন। মাংসের দাম বেড়ে গেছে, তবে আট গুণ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে বাংলাদেশে।