বিশেষ প্রতিবেদন।
বাংলা খবর ২৪।
শিবু প্রসাদ চৌধুরী চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতালের গণ সংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে মাসে তিরিশ হাজার টাকা বেতন চাকুরীতে কর্মরত ছিলেন। নামেই তিনি গণ সংযোগ কর্মকর্তা। অফিস না করেই তিনি প্রতি মাসেই নিয়মিত তুলতেন মোটা অংকের বেতন সহ নানা সুবিধা। ছাত্র জনতার উপর হামলার অভিযোগে বর্তমানে সে পলাতক রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে বিভিন্ন থানায় হত্যা, হামলা সহ কয়েক ডজন মামলা হযেছে।পালাতক থেকেও হাসপাতালের হাজিরা খাতায় তার নাম রহস্য জনক ভাবে লিপিবদ্ধ হচ্ছে এবং তার ব্যাংক একাউন্টে নিয়মিত জমা হচ্ছে বেতন। তিনি চাকরিতে নিয়মিত হাজির না হওয়া এবং চাকরি না করেও মাসে প্রায় লাখ টাকার মতো অবৈধ ভাবে আদায় করে আসছেন। আর এই সুযোগ তাকে করে দিযেছেন হাসপাতালে তথাকথিত সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরী।
শিবু প্রসাদ চৌধুরী চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সদস্য, বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলা চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এবং ২২ নং এনায়েত বাজার ওর্য়াডের যুবলীগের নেতা হিসেবে পরিচিত।
জুলাই আগস্টের প্রকাশ্যে ছাত্র জনতার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালানোর নেতৃত্বে ছিলো এই শিবু প্রকাশ চৌধুরী। শিবু দীর্ঘদিন ধরে সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর সমস্ত অপকর্মের হোতা হিসেবে কাজ করছেন। সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরী বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে তিনি ছাত্র জনতার রাজপথের আন্দোলনকে প্রতিহত করতে শিবুর মাধ্যমে প্রচুর টাকা খরচ করেছেন। তিনি মূলত চসিকের সাবেক মেযর এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছিরের অনুসারী।
শিবু হাসপাতালের কর্মচারীদের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করে রাখতেন এবং কর্মচারীরা কেউ সভাপতির বিরুদ্ধে কথা বললেই তাদের বিরুদ্ধে নেমে আসতো শিবুর অমানবিক নির্যাতন। তার ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পেতো না। হাসপাতালের ভেতরে ও বাইরের লোকজনকে সে চাঁদাবাজির মাধ্যমে শোষণ করত। শিবু বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে হাসপাতাল থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন। বিশেষ সুত্র মতে, শিবু প্রসাদ চৌধুরী অবৈধভাবে দুর্নীতির মাধ্যমে নিজের নামে ও স্ত্রীর নামে বেনাম ফ্লাইট জমি দোকান ব্যবসা ও ১০ থেকে ১২ টি সিএনজি রয়েছে।
হাসপাতালে শিবুর ভূমিকা নিয়ে কর্মচারীরা বলেন, শিবু হাসপাতালের সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরী লাঠিয়াল হিসেবে কাজ করে পুরো প্রতিষ্ঠানকে জিম্মি করে রেখেছিল। হাসপাতালের কর্মচারীরা আরও জানান, শিবু বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং জাহাঙ্গীর চৌধুরী তাকে ব্যবহার করে হাসপাতালের কর্মচারীদের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করে রাখতেন। হাসপাতালের কর্মচারী তার দাপটে ছিলো আতঙ্কিত।
শিবুর মতো সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর আরেক সন্ত্রাসী কর্মচারী মোজাম্মেল। মোজাম্মেল জাহাঙ্গীর চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়।
হাসপাতালের সংশ্লিষ্টদের প্রতিবাদের মুখে জাহাঙ্গীর চৌধুরী এবং তার তথাকথিত কমিটির সদস্যরা বর্তমানে পালিয়ে রয়েছেন। এই পরিস্থিতি সমাধানের জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম সরকারিভাবে পাঁচ সদস্যের একটি শৃঙ্খলা কমিটি গঠন করেছেন। এই কমিটির কাছে শিবু ও মোজাম্মেলের বেতন বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। প্রশাসনিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
আন্দোলনকারীরা হাসপাতালের তথাকথিত সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরী এবং শিবু প্রসাদ চৌধুরীকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন এই ঘটনাগুলো চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতালের নামকে কলঙ্কিত করছে জনস্বার্থে এসব অভিযোগের গভীর তদন্ত প্রয়োজন, যাতে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও নৈতিকতা প্রতিষ্ঠিত হয়। এই ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে যেন দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে হাসপাতালের কর্মীদের অধিকার সুরক্ষিত সুনিশ্চিত করা হয়।