বিভিন্ন জাতীয় দিবস সম্পর্কে শিশুরা যাতে যথাযথ শিক্ষা পায় তা নিশ্চিতে শিক্ষক ও অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ২৬ মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস, ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস, ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ১৭ মার্চ জাতীয় শিশু দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন। তাহলে আমাদের শিশু-কিশোর বা ছাত্ররা এই বিষয়গুলো জানবে না কেন? প্রশ্ন করা হলে তারা এড়িয়ে যাবে কেন? কাজেই এই শিক্ষাগুলো তাদেরকে যথাযথভাবে দিতে হবে। বিজয়ের জাতি আমরা। আমরা কী করে ভুলে যাব যে যুদ্ধ করে আমরা এই দেশকে স্বাধীন করেছি।
জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে গতকাল রোববার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ প্রাঙ্গণে বক্তব্য রাখছিলেন তার কন্যা শেখ হাসিনা। খবর বিডিনিউজের।
শেখ হাসিনা বলেন, এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ। এখন তো শিশুরা বিশ্বকে চোখের সামনে দেখতে পায়। কাজেই ক্লাসে শুধু বই পড়া নয়, চোখে দেখেও যেন তারা শিখতে পারে। আর আজকের শিশুরাই হবে আগামী দিনের ‘স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট নাগরিক’। আর সেটাই আমাদের সরকারের কাম্য।
সরকারপ্রধান বলেন, আমি চাই, আমাদের দেশের প্রতিটি শিশু যাতে সুন্দর, নিরাপদ এবং উন্নত জীবন পায়। আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী। সারা দেশে দিনটি জাতীয় শিশু কিশোর দিবস হিসেবে উদযাপিত হচ্ছে। স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর জন্ম। কালক্রমে তার হাত ধরেই বিশ্ব মানচিত্রে নতুন দেশ হিসেবে স্থান পায় আজকের বাংলাদেশ।
বাবা শেখ লুৎফর রহমানের যে উপদেশ বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে স্থান পেয়েছে, সেই উপদেশ উদ্ধৃতি করে শেখ হাসিনা বলেন, সেখানে আমার দাদা কিন্তু একটা কথাই বলেছেন, ‘যাই কিছু করো, পড়াশোনা করতে হবে, লেখাপড়া শিখতে হবে; লেখাপড়া শিখে মানুষের মত মানুষ হতে হবে’-এটাই তাঁর উপদেশ ছিল। অর্থাৎ সিনসিয়েরিটি অব পারপাস অ্যান্ড অনেস্টি অব পারপাস-এই দুটো যদি থাকে, জীবনে কখনো ব্যর্থ হবে না। সবসময় সফলতা আসবে। সততা এবং আন্তরিকতা থাকলে যেকোনো কাজেই সফলতা অর্জন করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শিশুরা যাতে অল্প বয়স থেকেই সড়কে চলতে পারে এবং ট্রাফিক আইন মেনে চলতে পারে, সেই শিক্ষা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, অভিভাবকসহ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এ সম্পর্কে ছোটবেলা থেকেই শিক্ষা দেওয়া একান্তভাবে প্রয়োজন, যাতে তারা কোনো দুর্ঘটনার শিকার হতে না পারে। এজন্য আইন এবং রাস্তায় চলাচল সম্পর্কে সম্যক শিক্ষা প্রদান করা একান্তভাবে দরকার। পাশাপাশি শিশুদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার শিক্ষা দিতে হবে। অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধী শিশুদের সঙ্গে কেউ যেন দুর্ব্যবহার না করে, বরং সহানুভূতিশীল দৃষ্টি দিয়ে দেখে, তাদের যেন আপন করে নেয়, সেজন্যও ছোটবেলা থেকে শিক্ষা দিতে হবে। যেকোনো অপচয় রোধ করা তাদের শিক্ষা দিতে হবে। তাহলেই তাদের মানুষের মতো মানুষ এবং মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হিসেবে গড়ে তোলা যাবে।
প্রধানমমন্ত্রী বলেন, আজকের শিশুদের কাছে এটাই আমার অনুরোধ, গুরুজনদের মানতে হবে, শিক্ষককে মানতে হবে, বাবা-মার কথা শুনে চলতে হবে, বাবা মার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। তাহলে কেউ বিপথে যাবে না।
শিক্ষক-অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতির থেকে দূরে থাকার জন্য ছোটবেলা থেকেই সততার শিক্ষা দিতে হবে। সেই সাথে গান-বাজনা ও লেখাপড়া, ছবি আঁকা থেকে শুরু করে ধর্মীয় শিক্ষাসহ সব ধরনের কারিকুলামের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ত করতে হবে।
ফিলিস্তিনের গাজায় শিশু ও নারীদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা নিয়ে মানবাধিকার সংস্থার ভূমিকা নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আজকে গাজায় শিশু ও নারীদের যে অবস্থা আমরা দেখি, আমি জানি না তা বিশ্ব বিবেক কেন নাড়া দেয় না, সেটাই আমার প্রশ্ন।
২৪/৭ খবর পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।
Contact us: contact@ybanglakhobor24
Copyright © 2024 banglakhobor24.net. All rights reserved.