শনিবার, জুলাই ১২, ২০২৫
spot_img

নগরীর বিপ্লব উদ্যানে ভবন নির্মাণে চসিকের আগের দুই মেয়র অনুমতি দিয়েছিলেন একতলা, বর্তমান মেয়র অনুমতি দিয়েছেন ৪ তলার।

শনিবার, জুলাই ১২, ২০২৫

নগরীর বিপ্লব উদ্যানে ভবন নির্মাণে চসিকের আগের দুই মেয়র অনুমতি দিয়েছিলেন একতলা, বর্তমান মেয়র অনুমতি দিয়েছেন ৪ তলার।

বাংলা খবর ২৪ অনলাইন নিউজ ডেস্ক, প্রকাশ:  ৮ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক:  চট্টগ্রাম নগরীর  ২ নম্বর গেটের বিপ্লব উদ্যান নিয়ে নতুন চুক্তি করেছে সিটি করপোরেশন (চসিক)। নতুন চুক্তিতে নূর হাফিজ প্রপার্টিজ কে উদ্যানে চারতলা ভবন নির্মাণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানটির সাথে চসিক ২৫ বছরের জন্য চুক্তি করে।

চসিকের আগের দুই মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও মো. রেজাউল করিম চৌধুরী যেখানে একতলা ভবন নির্মাণের অনুমতি দিয়েছিলেন, সেখানে বর্তমান মেয়র শাহাদাত হোসেনের নতুন চুক্তিতে উদ্যানে চারতলা ভবন নির্মাণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি চসিক নূর হাফিজ প্রপার্টিজ নামের প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে ২৫ বছরের জন্য চুক্তি করে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, উদ্যানে বিদ্যমান একতলা স্থাপনাটি বর্ধিত করে চারতলা পর্যন্ত নির্মাণ করা যাবে। দ্বিতীয় তলায় আধুনিক সবুজবান্ধব আরবান লাউঞ্জ, তৃতীয় তলায় ইনডোর গেমসের জন্য কফিশপসহ অবকাঠামো এবং চতুর্থ তলায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে প্রদর্শনী কেন্দ্র নির্মাণের সুযোগ রাখা হয়েছে। উদ্যানে বর্তমানে থাকা ২১টি দোকান ও ২টি শৌচাগার নতুন প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
জানা যায়, ১৯৭৯ সালে ২ নম্বর গেট এলাকায় এক একর জায়গায় বিপ্লব উদ্যান গড়ে তোলা হয়। ২০১৮ সালে তৎকালীন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন উদ্যানটিতে দোকানপাট নির্মাণ শুরু করেন। ২০২৩ সালে এসে তৎকালীন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী উদ্যানটিতে অবকাঠামো নির্মাণে আরেকটি চুক্তি করেছিলেন।
এদিকে, বিপ্লব উদ্যানে নতুন স্থাপনা নির্মাণ নিয়ে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা তীব্র বিরোধিতা জানিয়েছেন। নগরের পরিবেশ ও ইতিহাসের সুরক্ষায় উদ্বেগও প্রকাশ করেন তারা। তাদের বক্তব্য, নগরের সবুজ এলাকা এবং উন্মুক্ত স্থান ক্রমেই সংকুচিত হয়ে বাণিজ্যিকীকরণ হচ্ছে। আগের দুই মেয়রের সময়েও বিপ্লব উদ্যানে একই ধরনের চুক্তি হয়েছিল। তবে এসব চুক্তি বাতিল করতে হয়েছিল আদালতের নির্দেশে। এরপরেও এই নতুন চুক্তি নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
শুধু বিপ্লব উদ্যান নয়। নগরের চান্দগাঁও ও কোতোয়ালি থানার বিভিন্ন ফুটপাত দখল করে অবকাঠামো নির্মাণ শুরু করে চসিক। সম্প্রতি নগরের কোতোয়ালি থানা কাজির দেউরি আউটার স্টেডিয়াম সংলগ্ন পুলিশ বক্সের পাশের প্রায় ১০০ ফুট ফুটপাত ঘিরে সেখানে নতুন করে নির্মাণকাজ শুরু করেছে সংস্থাটি। যেখানে চসিকের মেয়র আ. জ. ম নাছির উদ্দীন ২০১৮ সালে দোকানপাট বরাদ্দ দিয়েছিলেন। ২০২৩ সালে এসে জেলা প্রশাসন সেগুলো উচ্ছেদ করে দিয়েছিল।
বিপ্লব উদ্যানে নিয়মিত হাঁটতে আসা কয়েক জন  বলেন, আমরা এখানে নিয়মিত হাঁটতে আসি। এমনিতে এখানে দোকানপাট নির্মাণ করে পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। এখন  চারতলা বাণিজ্যিক ভবন তৈরি করা খুবই হতাশাজনক। উদ্যানে হাঁটার জন্য যে শান্ত পরিবেশ ছিল, তা যদি হারিয়ে যায়, তাহলে কই যাবো আমরা? সিটি করপোরেশনকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের মতামত নেওয়ার উচিত ছিল। শহরে আমাদের বিশ্রামের জায়গা খুবই প্রয়োজন। সবুজ উদ্যানগুলো যদি শুধু বাণিজ্যিক কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করা হয়। তাহলে শহরের মানুষের জন্য বেঁচে থাকার স্পেসই তো থাকবে না!
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন পদে চেহারা পরিবর্তন হয়েছে। বাস্তবে কোনো পরিবর্তন হয়নি। আগের লোকেরাও অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছে, এখনো হচ্ছে। এটি দুঃখজনক। চসিকের শীর্ষ পদে যিনি আছেন, তিনি ৫ আগস্টের পরিবর্তনের পর বসেছেন। এত লোকের প্রাণহানির পর যিনি পদে বসেছেন, তার প্রতি জনগণের অনেক প্রত্যাশা। বিপ্লব উদ্যানে স্থাপনার অনুমতি দেওয়া, বাণিজ্য করার সুযোগ দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
চুক্তির বিষয়ে জানতে ডা. শাহাদাত হোসেন কানাডা সফরে থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বিপ্লব উদ্যানে খোলা স্থানে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। আগের যে জায়গায় দোকান রয়েছে, সেখানে স্থাপনা করতে হবে। এ জন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অনুমতি নিতে হবে।

http://bangla@khobor24
Contract us, 21 momin road, Chittagong Bangladesh. Mobile : 01759680807

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here