অনলাইন ডেস্ক, ২৩ অক্টোবর ২০২৪।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনার পদত্যাগের প্রভাব পড়েছে রাজনীতি, প্রশাসন, সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালতে। বাদ যায়নি বাংলাদেশ রেলওয়েও। আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজের বাজেট পায় রেলওয়ে। যার ৯০ শতাংশ নতুন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ছিল। এই অর্থ তৎকালীন সরকারের মন্ত্রী এমপিদের লুটপাটের সহযোগী হিসেবে ছিলো পুর্বাঞ্জল রেলের কিছু উদ্ধতর্ন কর্মকর্তা ও সুবিধাবাদী কিছু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
দেশ পর্রিবতনের এমন পরিস্থিতিতে রেলওয়ে পুর্বাঞ্জল সেই সুবিধা ভোগী উদ্ধতর্ন কর্মকর্তা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গুলো রাতারাতি দল পরিবর্তনের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। দখলে রেখেছে পুর্বাঞ্জল রেলওয়ের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ। এদের প্রভাবে পুর্বাঞ্জল রেলের বাকি কর্মকর্তা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গুলো ছিলো একপ্রকার অসহায়, বঞ্চিত ও নির্যাতিত।
আউটসোর্সিং এর নামে বাংলাদেশ রেলওয়ের কোটি কোটি টাকা লুটপাট করছে সুবিধাবাদী কিছু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অনভিজ্ঞ মাথা গনা শ্রমিক সাপ্লাই করে সরকারি এই সংস্থা থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোটা অংকের টাকা উত্তোলন করে নিলেও কাংখিত শ্রম বা সেবা দিতে পারছেনা ওই শ্রমিকেরা। এই সুবিধাবাদী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গুলোর সিন্ডিকেটের অন্যতম শাহ আমানত ও জান্নাত ট্রেডিং । এই দুটি প্রতিষ্ঠানের মালিক মো: শহিদুল ইসলাম প্রকাশ কানা শহীদ।
পুর্বাঞ্জল ও পশ্চিমঞ্জল রেলওয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টে আউটসোর্সিং নিয়োগের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গুলোর সিন্ডিকেটের অন্যতম শাহ আমানত ও জান্নাত ট্রেডিং এ-র বিরুদ্ধে। রাজশাহী, লালমনিরহাট, পাকশী, সৈয়দপুরের অধিনে লোকো, ক্যারেজ, ডিএস(ডব্লিউ) পদে ৪৭৩ জন আউটসোর্সিং লোক নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৬ টি প্যাকেজে ৬ টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান উক্ত নিয়োগের কাজ পায়। ৬ টি প্রতিষ্ঠান হলো মর্ডাণ এন্টারপ্রাইজ, জামান এন্টারপ্রাইজ, জাকি এন্টারপ্রাইজ, জান্নাত ট্রেডিং , এইচ এন্ড এইচ এন্টারপ্রাইজ, ও শাহ আমানত ।
নতুন পুরাতন মিলে প্রায় ৪৭৩ জনকে ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ১ লক্ষ টাকার বিনিময়ে উক্ত নিয়োগ দেয় শাহ আমানত ও জান্নাত ট্রেডিং । আউট সোর্সিং নিয়োগের নিয়ম ভঙ্গ করে পুরাতন কর্মীদের বাদ দিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকার বিনিময়ে নতুন লোকজন নিয়োগ দেয় এই প্রতিষ্ঠানটি।
বাদ পড়া পুরাতন কয়েকজন আউট সোর্সিং কর্মী জানান, নতুন হোক পুরাতন হোক নিয়োগ পেতে সবাইকেই টাকা দিতে হয়েছে। নতুনদের দিতে হয়েছে এক থেকে দুই লাখ টাকা। পুরাতনরা দিয়েছে ৫০ হাজার করে। টাকা দিতে না পারায় অনেক পুরাতন অভিজ্ঞ কর্মীদের বাদ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগের পূর্বশর্ত ছিলো পুরাতনরা অভিজ্ঞতার অগ্রাধিকার বলে আগে নিয়োগ পাবেন। কিন্তু সেই শর্ত টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছে।
এই বিষয় এ কথা বলার জন্য শাহ আমানত ও জান্নাত ট্রেডিং দুটির মালিক মো: শহিদুল ইসলাম প্রকাশ কানা শহিদের মূটো ফোন বার বার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করলেও প্রত্যাশিত শ্রম দিতে পারছেনা আউট সোর্সিং এর সেই অনভিজ্ঞ শ্রমিকরা। কারন ঠিকাদারদের অবৈধ শ্রমিক বানিজ্য। শ্রমিকের কোন অভিজ্ঞতা আছে কিনা, সে সেই কাজ করতে পারবে কিনা তা বিবেচনা না করেই অবৈধ ভাবে শ্রমিকদের থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে নিয়োগ দিচ্ছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। এসব লোক দিয়ে কাজ করানোর ফলে প্রায় সময়ই ঘটে থাকে দুর্ঘটনা। আর এ-ই অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া শ্রমিকদের কাজের প্রতি থাকেনা কোন দায়বদ্ধতা।